২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. খেলা
  5. চাকরি
  6. জাতীয়
  7. বিনোদন
  8. রাজনীতি
  9. সর্বশেষ
  10. সারাদেশ

মামলা ও মানববন্ধনের পরেও ধরা ছোঁয়ার বাইরে চাঁদাবাজ সেলিম গং

প্রতিবেদক
subeditor
অক্টোবর ১৪, ২০২৪ ৬:৩১ পূর্বাহ্ণ
মামলা ও মানববন্ধনের পরেও ধরা ছোঁয়ার বাইরে চাঁদাবাজ সেলিম গং

বিশেষ প্রতিনিধি:

মিরপুর ১ থেকে চারাবাগ পর্যন্ত দীর্ঘদিন ধরে হিউম্যান হলার সহ পরিবহন থেকে চাঁদাবাজির দায়ে গত ১১/০৯/২০২৪ ইং সেলিম ও তার সহযোগী ১১ জনের নামে দারুস সালাম থানায় একটি মামলা করা হয় এমনকি ১৭/৯/২০১৪ ইং হিউম্যান হলার মালিক কল্যাণ সমিতি চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে একটি মানববন্ধন করেন।

জানা যায়, মোঃ সেলিমের জন্মস্থান ফরিদপুর জেলার সালথা থানার উত্তর চন্ডী পদ্ধি গ্রামে। পিতা শামস উদ্দিন ছিলেন একজন দুধ বিক্রেতা। বছরখানেক আগে ফরিদপুর থেকে ভোটার আইডি কার্ড মাইগ্রেট করে গোপালগঞ্জের মোকসেদপুর নিয়ে আসেন এবং গোপালগঞ্জের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন ধরনের চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হন বলেও জানা যায়।

তার বর্তমান ঠিকানা ৩১২/৪/s/২, লালকুঠি, মিরপুর এক, দারুস সালাম ঢাকা। সেনাবাহিনীর কর্পোরাল শাখা থেকে অনিবার্য কারণবশত ২১ বছরের মাথায় চাকরি চলে যায়। অতি দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা মোঃ সেলিম মিয়া ২০১৬ সালে মিরপুর স্টাফ কোয়ার্টারে ৮ হাজার টাকার বাসা ভাড়া নিয়ে কোনরকম দিনাতিপাত করতে শুরু করেন।
পেনশনের টাকা দিয়ে ২০১৭ সালে দুটি লেগুনা গাড়ি কেনার মাধ্যমে নতুন যাত্রা শুরু করেন ঢাকা মেট্রো ছ- ১১-৩৭৮৫ ও ঢাকা-ছ-১১-০৩৫৯। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি মোঃ সেলিম মিয়ার। যুক্ত হয়ে পড়েন বিভিন্ন ধরনের চাঁদাবাজিতে। তাই চাঁদাবাজদের সাথে যুক্ত হওয়ার মাসখানেকের মধ্যে আরো চারটি গাড়ি কেনে।সব মিলিয়ে মোঃ সেলিম মিয়া বর্তমান ১৪ টি গাড়ির মালিক। মিরপুরে এক থেকে চারাবাগ পর্যন্ত -ঢাকা মেট্রো ছ ১২-০৩৮০-
ঢাকা মেট্রো ছ ১২-০৩৭৯
ঢাকা মেট্রো ছ ১১-৩৮৭৬
ঢাকা মেট্রো ছ ১৪-১৬৩৪
ঢাকা ছ ১১-০৪৩৫
ঢাকা ছ ১১-০৬৯৯
ঢাকা ছ ১১-০৩৫৫
ঢাকা ছ ১১-০৩৪৯-
ঢাকা ছ ১১-০৪৫১
ঢাকা ছ ১১-০৪৫৩
গাজীপুর ছ ১১-০৫১২
গাজীপুর ছ ১১-০২৫৯
মিরপুর ডাইমেনশন ব্যানারে প্রতিদিন ১৩০ টি গাড়ি চলে। প্রতিটি গাড়ি থেকে দিনে ১২ শত টাকা চাঁদা দিতে হয় সেলিম কে। সে হিসেবে মাসে চাঁদার পরিমান দাঁড়ায় ৪৬ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। যদি কোন মালিক চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানায় প্রশাসনের সাহায্যে তার গাড়িগুলো ডাম্পিংয়ে পাঠিয়ে দেয় এবং গাড়ি রাস্তায় চলতে দেওয়া হয় না। এতে তাকে সাহায্য করে রূপনগর,শাহাআলী ও দারুস সালাম থানা এবং বেশ কিছু সার্জেন্ট ও টিআই যারা প্রতি মাসে মোটা অংকের মাসোয়ারা নিয়ে থাকেন। ২০২৪ শের ৫ই আগস্ট সরকার পতনের পরেই তার সহযোগী চাঁদাবাজদেরকে নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছিলেন।বর্তমানে সেলিমের চাঁদাবাজ বাহিনী আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে। মিরপুরের সকল লেগুনা
মালিকগণ ৮ বছর ধরে নির্যাতিত এবং নিপীড়িত মাস্টারমাইন্ড সেলিম মিয়ার কাছে। সেলিম মিয়া চাঁদাবাজির এমনই এক অন্ধকার স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছেন যে চাঁদার ব্যাপারে মালিক পক্ষের কেউ কথা বললেই হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দিয়ে তার পরিবারকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতেও দ্বিধাবোধ করেন না।

এদিকে চাঁদাবাজির টাকায় অর্থের পাশাপাশি নিজের সামাজিক অবস্থান ও পরিবর্তন করে হয়েছিলেন দারুস সালাম থানা শ্রমিক লীগের সভাপতি।সকল ধরনের চাঁদাবাজিতে সেলিমকে সহযোগিতা করেন জাকির সিকদার যে কিছুদিন আগে সেলিমের কথায় এক অসহায় পরিবারের দুই ভাইয়ের নামে মামলা দিয়েছে দারুস সালাম থানায়। এই জাকির প্রতি মাসে জেলারের নাম বলে প্রত্যেকটা গাড়ি থেকে ১ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করেন বলে জানা যায় । সুমন দেওয়ান, সাগর সেলিমের বেতনভুক্ত ম্যানেজার যারা সমস্ত চাঁদার টাকা প্রতিদিন দুইবার করে বাসায় জমা দিয়ে আসে।সেলিমের লোক শাহিন, আসাদ,রনি, ও মান্নান ২০২২ সালে চাঁদা তুলতে গিয়ে র‍্যাবের হাতে ধরা পড়ার পর তাদেরকে দারুস সালাম থানায় সোপর্দ করে যে মামলা এখনো চলমান রয়েছে। এরা সবাই সেলিমের বেতনভুক্ত কর্মচারী। ল্যাইন ম্যান জাকিরের দুটি লেগুনা – ঢাকা মেট্রো ছ ১১-৩৭ ৫১ও
ঢাকা মেট্রো ছ-১২-০৩৪৯। ল্যাইন ম্যান সুমনের তিনটি লেগুনা ঢাকা-মেট্রো-ছ-১১-৩৮৪৯
ঢাকা -মেট্রো- ছ-১১-৩৭২১
ঢাকা মেট্রো-ছ-১১-৩৬৫৮।
অত্যন্ত দরিদ্র ফ্যামিলি থেকে উঠে আসা মিরপুরের চাঁদাবাজ সেলিম বর্তমানে শত কোটি টাকার মালিক। বছরখানেক আগে ৭০/৮০ লক্ষ টাকা খরচ করে গ্রামের বাড়িতে আলিশান বাড়ি তৈরি করেছেন, ঢাকায় নিজস্ব ফ্লাট। তিন ভাইয়ের মধ্যে সেলিম মিয়া বড়, বাকি দুই ভাইয়ের নামে করেছেন মুকসুদপুর সদর জসিমউদদীন প্লাজার দ্বিতীয় তলায় সোহেল ফ্যাশন নামে কাপড়ের দোকান এবং মুকসুদপুর সদর খান প্লাজার ২য় তলার ডান পাশে ক্লিনিকের ব্যবসা। ক্ষমতার অপব্যবহার করে শশুরের কাছ থেকে জোর করে নিয়েছেন ২টি ফ্ল্যাট । সেলিমের নিজস্ব কেনা ফ্লাটটিতে ডেকোরেশন বাবদ খরচ করেছে এক কোটি টাকা। ২০২৩ সালের ট্যাক্স ফাইলে এই ফ্লাট টির মূল্য দেখিয়েছে অনেক কম, তার নির্দিষ্ট কোন ব্যবসা ট্যাক্স ফাইলে তিনি দেখাননি। তাহলে এত সম্পত্তির উৎস কি? অর্থ পাচারের সহযোগী নাকি কোন মাদক ব্যবসা? এছাড়াও তার ১৪টি লেগুনা এবং একটি মোটর বাইক যেগুলো ট্যাক্স ফাইলে উল্লেখ্য নাই।

কয়েকজন লেগুনা চালকদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, আমরা গাড়ি রাস্তায় বের করলেই তাকে চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা না দিলে আমাদের উপরে নির্যাতন শুরু করে এবং পুলিশ দিয়ে গাড়ি ডাম্পিংয়ে পাঠিয়ে দেন।
পরিবহন বা লেগুনা গাড়িতে চাঁদাবাজির বিষয়ে ছাত্র সমাজ ও পরিবহন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, চাঁদাবাজি বন্ধ না হলে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব হবে না। এই চাঁদার টাকা জোগাড়ের জন্য চালকরা বেপরোয়াগাড়ি চালায়। যে কারণে সড়কে বাড়ছে দুর্ঘটনা। আর গাড়ি চলার ক্ষেত্রে কমিশনিং সিস্টেম বন্ধ করতে হবে বলেও মত দেন তারা।
চাঁদাবাজ সেলিম গংদের বিরুদ্ধে দারুসসালাম থানায় মামলাসহ মিরপুর-১, এ মানববন্ধনের পরও তাদের কাউকেই এ পর্যন্ত গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে দারুস সালাম থানার এই মামলার (আয়ু)এসআই রিয়াজুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে আসামি ধরার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা আসামি ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছি।

 

সর্বশেষ - বিনোদন

সর্বোচ্চ পঠিত - বিনোদন